• ঢাকা, বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১
  •   | হট লাইনঃ ০১৮৮৩১০৭৯৫৪

রহস্যময় চিরকুট লিখে ছেলেটি উধাও

রহস্যময় চিরকুট লিখে ছেলেটি উধাও

বুধবার, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:০২ পূর্বাহ্ণ

রহস্যময় চিরকুট লিখে বাড়ি থেকে চলে গেছে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিন (১৪)।
চিরকুটের কথাগুলো ছিল- ‘আমি গৃহপলায়ন করি নাই। গৃহত্যাগ করিলাম। সত্যের সন্ধানে যাচ্ছি। আমাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই। সত্যের মধ্যে সত্য আছে। কাজের ভেতরে কাজ আছে।’

মোমিন সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। শুক্রবার রাতে মোহায়মিনুল এশার নামাজ পড়ার কথা বলে তাদের ভাড়া বাড়ি শহরের মনজিতপুর থেকে বেরিয়ে যায়। এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

মোমিনের নিজ হাতে লেখা দীর্ঘ চিঠিতে মোহায়মিনুল আরও লিখেছে, ‘দীর্ঘকালে আমাকে কেহ চিনে নাই, জানে নাই আমার কাজকে। আজ হয়তো প্রভুর অনুমতিক্রমে আমার সময় শেষ। তাই চলিলাম। ইহা স্বাভাবিক। অন্তত মুসলিমের পক্ষে। আমি সত্য লইয়াই আঁধার রাতে বাহির হইয়াছি।’

মোমিনের বড় ভাই আবদুল আহাদ জানান, সে অত্যন্ত চুপচাপ স্বভাবের ছেলে। তার কোনো বন্ধুও নেই। দুই-একটি ছেলের সঙ্গে সে স্কুলে যেত। মোমিন লেখাপড়ার পাশাপাশি সবসময় আল্লাহর পথ নিয়ে ভাবত। কথা বলত এবং কবিতা লিখত। গোপালগঞ্জ সদরে তাদের বাড়ি উল্লেখ করে আবদুল আহাদ বলেন, ক্লাসে তার রোল ১। সে রহস্যময় কথাবার্তা লিখে গেছে। প্রকৃতপক্ষে সে কোথায় গেছে তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।

মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘আমার ছেলে নম্রভদ্র স্বভাবের। সে কোনো চক্রের খপ্পরে পড়ে থাকতে পারে। জেলা পুলিশের সহায়তায় তাকে আমরা খুঁজছি। এখনও পাইনি।’

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ সরকার জানান, শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পরই মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান তার কাছে এসে জানান তার ছেলের গৃহত্যাগের কথা। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

প্রধান শিক্ষক জানান, ছেলেটি অত্যন্ত বিনয়ী, নম্র ও ভদ্র স্বভাবের। তিনি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তার লেখাপড়া, আচরণ ও শৃঙ্খলা- সব দিকই ছিল প্রশংসনীয়। তবে গৃহত্যাগের কারণ কী তা তিনি বলতে পারেননি।

সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চিঠিতে যেসব কথা বলা হয়েছে, তা আধ্যাত্মিক ভাষায়। তবে সে জঙ্গির পথ ধরেছে কিনা তা নিশ্চিত নয়।

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎমিশ জানান, ছেলেটির নিখোঁজ খবর শুনে আমরা সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তবে সে কোথায় ও কেন গেছে তার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।