মাদক প্রতিরোধে ড. আতাউর রহমান এর প্রশংসনীয় উদ্যোগ
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১১:৪০ অপরাহ্ণ
সমাজ যখন হতাশায় নিমজ্জিত, তখন কিছু মানুষ থাকেন যারা আলোর প্রদীপ জ্বালান। মাদকগ্রস্ত তরুণদের জীবনে এমনই আলো হয়ে এসেছেন রেনাসাঁ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. আতাউর রহমান। তিনি শুরু করেছেন এক অভিনব কর্মসূচি—মাদক সেবীদের চিহ্নিত করে, তাদের জীবন গঠনের নতুন পথ দেখানো। এটা কেবল একটি প্রজেক্ট নয়, বরং এটি হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষার এক মানবিক বিপ্লব।এই কার্যক্রম চালু হয়েছে বিভিন্ন বিদ্যালয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক কমিউনিটিতে, যেখানে মাদকের বিস্তার বেশি। প্রথম পর্যায়ে ড. আতাউর রহমান নিজ উদ্যোগে স্কুলগুলোতে বিতরণ করেছেন খেলাধুলার সামগ্রী, যাতে শিশু-কিশোরেরা খেলাধুলায় মগ্ন হয়ে মাদক থেকে দূরে থাকে। একইসঙ্গে, বিভিন্ন এলাকা ও ওয়ার্ডে বসানো হয়েছে “অস্থায়ী অভিযোগ বক্স”, যা ৫ থেকে ৭ দিনের জন্য স্থাপন করা হয়। এটি জনগণকে কথা বলার এবং সমস্যার মূল শিকড় ধরার সুযোগ দিয়েছে। ড. আতাউর রহমান বলেন, “আমরা শুধু অভিযোগ করি, কিন্তু কখনও ভাবি না কেন একজন তরুণ মাদকে জড়ায়? আমি জানতে চেয়েছি—কেন? তাদের ব্যথা, তাদের লড়াই, তাদের নিঃসঙ্গতা।” অনেক তরুণ অভাব, হতাশা, পরিবারে ভাঙন বা বন্ধুত্বের নামে প্রতারণার শিকার হয়ে মাদকের দিকে ধাবিত হয়েছে। এই কারণেই তিনি শুধু দোষ না দিয়ে, তাদের সমস্যার শিকড়ে হাত দিয়েছেন। এই পুরো প্রক্রিয়াটি খুব মানবিক ও কৌশলী: ১. অভিযোগ বক্সে এলাকাবাসী গোপনে জানাতে পারেন, কে বা কারা মাদক সেবন বা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ২. সেসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে তৈরি হয় একটি তালিকা। ৩. তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের প্রথমে শাস্তি নয়, বরং ডাকা হয় আলোচনায়—তাদের বলা হয়: “তুমি কি সত্যিই বদলাতে চাও?” ৪. যারা প্রতিশ্রুতি দেয় মাদক ছাড়বে, তাদের দেওয়া হয় চাকরি, ক্ষুদ্র ব্যবসার মূলধন, প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ। ৫. পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হচ্ছে খেলাধুলা সামগ্রী ও অনুপ্রেরণামূলক কর্মশালা, যাতে তারা শুরু থেকেই সঠিক পথে থাকে। এই উদ্যোগে অসংখ্য তরুণ ফিরে পেয়েছে নতুন জীবন। কেউ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা হয়েছে, কেউ আবার মাঠে ফিরেছে ফুটবলার হিসেবে। সবচেয়ে বড় কথা—তারা সমাজের বোঝা নয়, সমাজ পরিবর্তনের সৈনিক হয়ে উঠেছে। একজন মানুষ বদলে দিতে পারে সমাজ ড. আতাউর রহমান প্রমাণ করেছেন—মানবিকতা দিয়ে জয় করা যায় হৃদয়, এবং সচেতনতা দিয়ে গড়া যায় ভবিষ্যৎ। তাঁর এই কর্মসূচি একটি প্রশ্ন তুলে দেয় আমাদের প্রতিটি মানুষের মনে “আমরাও কি এমন একজন হতে পারি না, যে একজন জীবনকে রক্ষা করবে?আমরাও কি এমন একটি উদ্যোগ নিতে পারি না, যাতে আমাদের শহর, গ্রাম, মহল্লা হয় মাদকমুক্ত?” আলোর যাত্রা সোনারগাঁ থেকে শুরু ড. আতাউর রহমান দেখিয়েছেন—একটি উপজেলা থেকে শুরু করেও বদলে দেওয়া যায় একটি প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। সোনারগাঁ আজ শুধু একটি ভৌগোলিক নাম নয়—এটি হয়ে উঠছে মাদকমুক্ত সমাজের রোল মডেল। এই প্রয়াস শুধু একটি ব্যক্তিগত উদ্যোগ নয়, এটি এক আত্মিক আন্দোলন—একটি আলোকিত বাংলাদেশের স্বপ্ন। যেখানে প্রতিটি তরুণ হয়ে উঠবে সম্ভাবনার প্রতীক, যেখানে মাদক নয়, জীবন জয়ী হবে।